সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে না থাকলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চিয়া সিড হচ্ছে বর্তমান জনপ্রিয় একটি সুপার ফুড। কারন চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ওমেগা- ৩ ফ্যাটি এসিড, প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সকালে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ওচিয়া সিড
খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব, এবং সেই সাথে ওজন কমাতে
চিয়া সিডের ভূমিকা কি সে সম্পর্কে আলোচনা করব। সুতরাং আশা করি এই আর্টিকেলটি
পড়ে আপনি উপকৃত হবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
- সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
- চিয়া সিডের উৎপত্তি ও ইতিহাস
- চিয়া সিড কি ও এর বৈশিষ্ট্য
- চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
- চিয়া সিড খেলে কি ওজন কমে
- চিয়া সিড এর পুষ্টিগুণ
- গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যাবে কি
- চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
- প্রতিদিন কতটুকু পরিমাণ চিয়া সিড খাওয়া ভালো
- চিয়া সিড দিয়ে রেসিপি বানাবেন যেভাবে
- লেখকের মন্তব্যঃ সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা অনেক। সকালে খালি পেটে চিয়া সিড
খেলে শরীরের শক্তি ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়। তবে অনেকেই এটিকে সকালের নাস্তায়
বা দুপুরের খাবারের সাথে এবং রাতের খাবারের শেষে চিয়া সিড খেয়ে থাকেন। আবার
অনেকেই দেখা যায় যে তারা চিয়া সিড রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খান। তবে
আপনি যেভাবেই খান না কেন চিয়া সিড সুস্বাস্থ্যের জন্য দারুন উপকারী। তবে
সকালে খালি পেটে খেলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়। চলুন এক নজরে দেখি নিই, চিয়া
সিডের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে -
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ চিয়া সিডের অভ্যন্তরে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড যা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা দারুন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আর রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা যত নিয়ন্ত্রণে থাকবে ততো আমাদের হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকবে। তাই হৃদপিন্ডের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য আপনি নিয়মিত চিয়া সিড খেতে পারেন।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ ডায়াবেটিস রোগটি মানুষের কাছে খুব একটি পরিচিত রোগ। কারণ বর্তমানে অনেক মানুষই ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। এ রোগটি বর্তমানে ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়স ব্যক্তি পর্যন্ত প্রায় সবার হচ্ছে। রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে গেলে এ রোগটি হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করে থাকি। কিন্তু সেগুলো একটি দীর্ঘ ভূমিয়াদী প্রক্রিয়া।
- তাই আপনি যদি রক্তে সুগারের পরিমাণ স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখতে চান তাহলে চিয়া সিড খাওয়ার বিকল্প নেই। কারণ চিয়া সিড আপনার রক্তে সুগারের আধিক্য নিমিষে কমিয়ে ফেলতে পারে। এবং রক্তের ভিতর ইন্সুলেশন এর মাত্রা বাড়িয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই আপনি যদি আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাহলে আপনাকে নিয়মিত চিয়া সিড খেতে হবে। তাহলে আপনি সহজেই আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
- রক্তস্বল্পতা দূর করতেঃ রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই চিয়া সিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারন চিয়া সিডের ভেতরে রয়েছে আয়রন। যা রক্তস্বল্পতা দূর করার মূল উপাদান। এই চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- কিডনি রোগ প্রতিরোধঃ চিয়া সিড কিডনি ভালো রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের অনেকেরই কিডনি সমস্যা হয়ে থাকে। কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত চিয়া সিট খেতে পারেন তাহলে আপনার কিডনি সমস্যা আর দেখা দিবে না। কারণ কিডনির কর্মদক্ষতা ও ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য যে সকল উপাদান থাকা দরকার তার প্রায় সবগুলোই রয়েছে এই চিয়া সিডের ভিতরে। তাই আপনার কিডনি ভালো রাখতে আপনি নিয়মিত চিয়া সিড খেতে পারেন। তবে এটি সকালে খালি পেটে খেলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করতেঃ আমাদের অনেকের দেখা যায় তারা অনেক বেশি মাত্রায় মোটা হয়ে থাকে অর্থাৎ তাদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে চেয়ে অনেক বেশি হয়। তাই তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার জন্য তাদের অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। তবে আপনি জানলে অবাক হবেন যে, আপনি যদি নিয়মিত চিয়া সিড খান তাহলে এটি আপনার দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে দারুণ ভূমিকা রাখবে। কারণ চিয়া সিডে রয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ফাইবার। যা আপনার অতিরিক্ত ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ পালন করে।
- চুলের যত্নেঃ বর্তমান জেনারেশনের অনেক ছেলে মেয়ের একটি কমন সমস্যা হচ্ছে অল্প বয়সেই তাদের চুল পড়ে যায়। এর কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত ডিভাইসের প্রতি আসক্তি এবং শরীরে প্রোটিন এর ঘাটতি। তবে আপনার চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই কারণ চিয়া সিডে রয়েছেন ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যা আপনার চুল পড়া রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও চুলের রুক্ষতা দূর করার জন্য চিয়া সিডে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন। আপনি যদি নিয়মিত চিয়া সিড খেতে পারেন তাহলে আপনার চুল পড়া সমস্যা আর দেখা দিবে না।
- হাড়ের গঠন সুগঠিত করতেঃ মানবদেহের হাড় সুস্থ ও সবল রাখতে চিয়া সিড খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। কারণ এই চিয়া সিডে রয়েছে হাড় সুস্থ ও সবল রাখার যাবতীয় উপাদান। যেমন ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও আয়রন এই উপাদানগুলো হাড় সুস্থ ও সরল রাখতে সাহায্য করে। আর এ সকল উপাদানই রয়েছে চিয়া সিড এর ভিতরে।
- ছোট বাচ্চাদের বিকাশেঃ বাচ্চাদের জন্য চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা অনেক। কারণ চিয়া সিডে থাকা ভিটামিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম আয়রন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড বাচ্চাদের মস্তিষ্কের বৃদ্ধি বিকাশের দারুণ ভূমিকা। তাই আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে নিয়মিত চিয়া সিড খাওয়ান তাহলে তার মেধা দ্রুত বিকশিত হবে।
- হজমে সহায়কঃ আমাদের অনেকেরই দেখা যায় দেখা যায়, খাদ্য ঠিকমতো হজম হয় না। আপনার যদি এ সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি চিয়া সিড খেতে পারেন। কারণ এতে রয়েছে উচ্চ ফাইবার। যা আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এবং এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার শরীরকে মেডিকেল ফ্রি রেডিকেল ক্ষতি থেকে বাঁচায়।
- ঘুমঃ ঘুম হচ্ছে এমন একটি উপাদান যা আমাদের ব্রেনকে চার্জ করে। আপনার ঘুম যদি ঠিকমতো না হয় তাহলে আপনার ব্রেনের চার্জ ও ঠিকমতো হয় না। যার ফলে মাথাব্যথা সহ আরো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু আপনি যদি সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খেতে পারেন তাহলে এই সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন। কারণ চিয়া সিড আপনার ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে। এবং এটি আপনার শরীর থেকে টক্সিন নামক বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ বিনা পুঁজিতে টাকা ইনকাম করার উপায়
চিয়া সিড নিঃসন্দেহে একটি পুষ্টি গুণাগুণ সম্পন্ন উপাদান। উপরে বর্ণিত সকল
উপাদান গুলো চিয়া সিডে রয়েছে। তাই এটি যদি আপনি প্রতিদিন নিয়মিত নির্দিষ্ট
পরিমাণ চিয়া সিড খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে
এবং শরীর সুস্থ ও সতেজ দেখাবে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন সকালে খালি পেটে
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা কত সে সম্পর্কে।
চিয়া সিডের উৎপত্তি ও ইতিহাস
চিয়া সীড হচ্ছে সালভিয়া ইসপানিকা নামক ফুল গাছের বীজ। প্রাচীন যুগে
প্রায় তিন হাজার বছর আগে মায়া ও অ্যাজটেক সভ্যতার মানুষ
এটিকে খাবার হিসাবে ব্যবহার করত। এমনকি এ খাবারটি তাদের যোদ্ধাদের জন্য
পরিবেশন করা হতো। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি
এসিড । যা যোদ্ধাদের দীর্ঘ সময় পর্যন্ত লড়াই করার শারীরিক সক্ষমতা বজায়
থাকতো। পরবর্তীতে এই গাছ আর চাষ করা হতো না।
তবে বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এসে বিশেষজ্ঞগণ আবার এর উপর গবেষণা করে দেখতে
পাই যে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, ও বিভিন্ন
ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে। বর্তমানে চিয়া সিট কে সুপার ফুড বলা হয়ে থাকে। এবং
অনেক স্বাস্থ্য সচেতনতা বোধসম্পন্ন মানুষ এটিকে সালাত, দই,
ওটস ইত্যাদি ডেজার্ট খাবারের সাথে ব্যবহার করে থাকে। বর্তমানে চিয়া সিড
অস্ট্রেলিয়া, বলিভিয়া, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, ইত্যাদি দেশে ব্যাপক পরিমাণে চাষ
করা হচ্ছে ।
চিয়া সিড কি ও এর বৈশিষ্ট্য
চিয়া সিড হচ্ছে একটি ছোট দানাদার বীজ যা সালভিয়া স্প্যানিকা উদ্ভিদের ফল থেকে
পাওয়া যায়। অর্থাৎ এখানে মরুভূমির অঞ্চলে জন্ম নেওয়া সালভিয়া উদ্ভিদের বীজ কে
বোঝানো হয়েছে। এটি মধ্য আমেরিকার বেশ কিছু অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
এটি বর্তমানে আমাদের দেশে সুপার ফুড হিসাবে বেশ পরিচিত লাভ করেছে। চিয়া সিড এর
বাংলা নাম হচ্ছে চিয়া বীজ। এটি দেখতে অনেকটা তোকমার মত। তবে এটি তোকমা না।
চিয়া বীজ ও তোকমা দুইটি আলাদা জিনিস। চিয়া বীজকে চেনার জন্য এর কিছু বৈশিষ্ট্য
রয়েছে যেমন
- এটি আকারে খুব ছোট হয়
- এর স্বাদ খুব হালকা, তাই যে কোন খাবারের সাথে সহজেই মিশিয়ে খাওয়া যায়
- পানিতে ভিজালে সহজেই ফুলে জেলির মত স্তর তৈরি করে
- এর রং সাধারণত কালো সাদা এবং ধূসর হয়ে থাকে
সাধারণত চিয়া সিডের বৈশিষ্ট্য এইরকমই হয়ে থাকে। আপনি বাজার থেকে কেনার
সময় উপরে বর্ণিত বৈশিষ্ট্য গুলোর সাথে মিলিয়ে কিনবেন। তাহলে আপনাকে নকল পণ্য
দিয়ে ঠকাতে পারবে না। বর্তমানে অনেকেই চিয়া সিডের নামে অন্য পণ্য
দিয়ে থাকেন। যেগুলো খেলে আমাদের শরীরের ক্ষতি হতে পারে। তাই বাজার থেকে
কেনার সময় অবশ্যই আপনি এর বৈশিষ্ট্য দেখে সঠিক পণ্য কিনবেন।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
অনেক ভাই ও বোন চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। আপনিও যদি
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ
সহকারে পড়ুন। চিয়া সিড হচ্ছে সাদ গন্ধবিহীন এক ধরনের দানাদার খাবার। তবে এটি সব
সময় পানিতে বা অন্য কোন তরল লে ভিজিয়ে কিছুক্ষণ রেখে তারপর খাওয়া উচিত। কারণ
চিয়া সিড তরল শোষক হওয়ার কারণে আপনি যদি শুকনো চিয়া সিড তাহলে মুখের
লালার সাথে আংশিক ভিজে যায়।
যার ফলে এটি গলায় আটকে যেতে পারে। তাই চিয়া সিড খাওয়ার আগে কিছু সময়
ভিজিয়ে রেখে তারপরে খাবেন। আপনি একটি পাত্রে কুসুম গরম পানিতে ২০ থেকে
৩০ মিনিট চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখবেন। তারপর আপনি সকালে খালি পেটে অথবা রাতে
ঘুমানোর পূর্বে ভিজিয়ে রাখা চিয়া সিড খেতে পারেন। তবে সকালে খালি পেটে চিয়া
সিড খাওয়ার উপকারিতা সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও এটি আপনি সুপার ফুড হিসেবেও
খেতে পারেন।
এর জন্য আপনাকে টক দই, শসা, চিয়া সিড সবগুলোকে একসাথে মিশ্রিত করে
পাউরুটির সাথে মিশিয়ে সুপার ফুড হিসেবে খেতে পারেন। এছাড়াও আপনি এক গ্লাস
পানিতে দুই চা চামচ চিয়া সিড, এক চা চামচ মধু, ও এক টুকরো সহজে শরবত
বানিয়ে খেতে পারেন। আবার এটিকে আপনি চাইলে পুডিং, জুস ওটস ইত্যাদির সাথে মিশিও
খেতে পারেন। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন কিভাবে চিয়া সিড খেতে হয়।
চিয়া সিড খেলে কি ওজন কমে
ওজন কমানোর জন্য চিয়া সিড একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কারণ চিয়া সিডে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, যা আপনার শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে
সাহায্য করে। এছাড়াও চিয়া সিডে রয়েছে উন্নত মানের ফাইবার। যা আপনার ক্ষুধা দূর
করে। ফলে আমাদের দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ক্ষুধা লাগে না। যার ফলে আপনার দ্রুত ওজন
কমাতে সহায়তা করে।
এছাড়াও আপনার মস্তিষ্কের স্ট্রেস কমাতে ব্যাপক সহায়তা করে। এই চিয়া সিড আপনি
যদি ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন তাহলে আপনার ওজন দ্রুত কমতে পারে।
কারণ ভেজানো চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা আপনার পেটের চর্বি
কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আঁশ জাতীয় উপাদান,
যার ফলে আপনার ক্ষুধা কম লাগবে,
এবং এর উপাদান গুলো আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন
চিয়া সিড খেলে আপনার শরীরের দ্রুত ওজন কমবে কিন্তু এর কোন পার্শ প্রতিক্রিয়া
দেখা দিবে না। যা আপনার শরীরের জন্য নিরাপদ। তাই বলা যায় যে নিয়মিত চিয়া সিড
খেতে পারেন তাহলে আপনার ওজন কমার পাশাপাশি আপনি সুস্থ ও সবল থাকবেন।
তবে আপনি যদি দ্রুত ওজন বাড়ানোর জন্য অধিক পরিমাণে চিয়া সিড খান তাহলে আপনার
উপকারের চাইতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ কোন জিনিসই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক
না। অতিরিক্ত খেলে এর বিভিন্ন রকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে। তাই ওজন
কমানোর জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণে চিয়া সিড খেতে হবে। তাহলে আপনি ভালো ফলাফল
পাবেন। এবং আপনি যদি দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে দ্রুত ফলাফল
পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।
চিয়া সিড এর পুষ্টিগুণ
চিয়া সিড বেশ উপকারী একটি খাদ্য উপাদান। এটি আপনার শরীরের পুষ্টি ও গুণগতমান
স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এজন্য চিয়া সীড কে বলা হয়
সুপার ফুড। কারণ চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা- ৩ ফ্যাটি
এসিড,পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ক্লোরো জেনিক এসিড, ক্যাথিক
অ্যাসিড এবং দ্রবণীয় অদ্রবনীয় আঁশ জাতীয় উপাদান। এছাড়াও চিয়া সিডে রয়েছে
উন্নত মানের ফাইবার। চিয়া সিডে রয়েছে কমলার চেয়ে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি,
মুরগির ডিম থেকে তিনগুণ বেশি প্রোটিন, মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ফ্যাটি
অ্যাসিড,পালং শাকের চেয়ে তিনগুণ বেশি আয়রন। এছাড়াও রয়েছে দুধের চেয়ে পাঁচ
গুণ বেশি ক্যালসিয়াম ও কলার চেয়ে দ্বিগুন বেশি পটাশিয়াম। তাই বলা যায়
চিয়া সীড আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। বিশেষজ্ঞগন প্রতি 100
গ্রাম চিয়া সিডের ভিতরে যে সকল পুষ্টি উপাদান গুলো খুঁজে পেয়েছে তা জানলে আপনি
চমকে উঠবেন। চলুন দেখে নিই প্রতি একশ গ্রাম চিয়া সিডের ভেতরে কি পরিমাণ পুষ্টি
উপাদান রয়েছেঃ
- আইরন ৭.৭ মিলিগ্রাম
- প্রোটিন ১৬.৫ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস ৪৮০ মিলিগ্রাম
- জিংক ৪.৬ মিলিগ্রাম
- ৪৮৬ কিলো ক্যালরি
- চর্বি ৩০ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট ৪৩ গ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম ৩৩৫ মিলিগ্রাম
- ফাইবার ৩৫ গ্রাম
- পটাশিয়াম ৪০৭ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম ৬৩০ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি3 ৯ মিলিগ্রাম
প্রতি 100 গ্রাম চিয়া সিডে যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা আমাদের শরীরের
পুষ্টি মেটাতে সক্ষম। তবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য দিনে 15 থেকে 20
গ্রাম চিয়া সিড খেতে হবে। এর চাইতে বেশি খেলে বিপরীত ফল আসতে পারে। তাই
আপনাকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। আশা করি আপনি চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে
বুঝতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যাবে কি
অনেক ভাই ও বোন প্রশ্ন করে থাকেন যে গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যাবে কিনা।
তাদের উদ্দেশ্যে আমরা বলতে চাই, অবশ্যই গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যাবে। কারণ
গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। চিয়া সিড খাওয়ার ফলে
যেমন একদিকে মায়ের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হয় ঠিক এর বিপরীত পাশে গর্ভের শিশুর
বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। গর্ভবতী নারীদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার জন্য
সকালে, দুপুরে অথবা রাতে চিয়া সিড খাওয়া যেতে পারে।
তবে চিয়া সিড শুকনো না খাওয়াই ভালো। কারণ শুকনো চিয়া সিড খেলে মুখের
লালার সাথে মিশে আংশিক ভিজে গিয়ে সেটি ফুলে গলায় আটকে যেতে
পারে। চিয়া সিড কিছুক্ষণ পানিতে ভেজিয়ে রেখে তারপরে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া
যায়। এছাড়াও আপনি যদি গরম দুধের সাথে কিছুটা চিয়া বীজ মিশিয়ে খেতে পারেন
তাহলে এর কার্যকারিতা বহুগুনে বেড়ে যায়।
এছাড়াও আপনি এটিকে বিভিন্ন রেসিপি বানিয়ে খেতে পারেন। যেমন এক গ্লাস পানিতে এক
চা চামচ চিয়া সিড মিশিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট মতো ভিজিয়ে রেখে তারপর আরো সাদ
বৃদ্ধি করার জন্য সামান্য পরিমাণ মধু মিক্স করে রেসিপি বানিয়ে খেতে পারেন।
এভাবে রেসিপি বানিয়ে খেলে যেমন স্বাদ বৃদ্ধি পাবে ঠিক তেমনি এর উপকারিতা
বৃদ্ধি পাবে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন , গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার
উপকারিতা সম্পর্কে।
চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমন চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি খাওয়াও আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।তাই আমি বলব
চিয়া সিড খাওয়ার আগে আপনি কে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ভালোভাবেই জানুন।
আপনার যদি এমন কোন রোগ থেকে থাকে যদি আপনি চিয়া সিড খান তাহলে আপনার শরীরে পার্শ
প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তাহলে আপনি চিয়া সিড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। চলুন
আমরা জেনে নিই চিয়া সিড খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা
সম্পর্কে।
- আপনার যদি রক্ত পাতলা হয় অথবা যাদের রক্ত পাতলা হওয়ার জন্য ওষুধ চলছে তাদের না খাওয়াই ভালো।
- চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, তাই এটি অধিক পরিমাণে খেলে আপনার হজমে সমস্যা হতে পারে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে, পেট ফুলে যাওয়া বা ডায়রিয়ার মত পেটের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
- আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হন তাহলে আপনার অধিক পরিমাণে না খাওয়াই ভালো। কারণ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও অনেক সময় রক্তে শর্করার মাত্রা এতটাই কমিয়ে দেয় যে তা আপনার দেহের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে অল্প পরিমাণে খেলে সমস্যা নেই।
- চিয়া সিড খেলে শরীরে এলার্জির সৃষ্টি হতে পারে। তাই আপনার যদি আগে থেকেই এলার্জির সমস্যা থাকে তাহলে আপনার জন্য চিয়া সিড না খাওয়াই ভালো।
- বর্তমানে বাজারে চিয়া সিডের নামে অন্য কোন উপাদান দিয়ে দেয়। যাক আপনার শরীরে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই আপনি ভালো মানের চিয়া সিড না পেলে চিয়া সিড না খাওয়াই ভালো।
- চিয়া সিড শুষ্ক অবস্থায় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ শুষ্ক অবস্থায় খেলে আপনার লালার সাথে মিশে আংশিক ভিজে গিয়ে সেটি ভিজে গিয়ে আপনার গলায় আটকে যেতে পারে।
উপরের সমস্যাগুলো যদি আপনার থেকে থাকে তাহলে আপনার চিয়া সিড না খাওয়াই ভালো।
কারণ এই সমস্যাগুলো থাকার পরও যদি আপনি খান তাহলে আপনার উপকারের বদলে ক্ষতি বেশি
হবে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে।
প্রতিদিন কতটুকু পরিমাণ চিয়া সিড খাওয়া ভালো
আজকের এই আর্টিকেলের এই অংশে আমরা জানবো প্রতিদিন কতটুকু পরিমান চিয়া সিড
খেতে হবে। একজন ব্যক্তির জানা উচিত তাকে প্রতিদিন কি পরিমান চিয়া সিড খাওয়া
উচিত। কেননা অধিক পরিমাণে চিয়া সিড খেলে আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে
পারে। তাই আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ চিয়া সিড খেতে হবে। চলুন জেনে নিই প্রতিদিন
কি পরিমান চিয়া সিড খাওয়া ভালো।
- আপনি যদি চিয়া সিড খাওয়া শুরু করতে চান তাহলে প্রথমে আপনি এক চা চামচ করে প্রতিদিন খাবেন। এবং কিছুদিন পর আপনার খাওয়ার পরিমাণ আস্তে আস্তে বাড়াবেন।
- ছোট বাচ্চাদেরকে দিনে আধা থেকে এক চা চামচ পরিমাণ পর্যন্ত খাওয়া ভালো। এর চাইতে বেশি না খাওয়াই ভালো।
- একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য দিনে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ গ্রাম খাওয়া ভালো।
চিয়া সিডে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি যদি আপনি অধিক পরিমাণে গ্রহণ করেন
তাহলে আপনার বদহজম ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। এবং এর সাথেও বিভিন্ন
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই আপনি উপরের নির্দেশনা গুলি
মেনে চিয়া সিড খাবেন। আশা করি আপনাকে কতটুকু পরিমাণ চিয়া সিড
খেতে হবে সে সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
চিয়া সিড দিয়ে রেসিপি বানাবেন যেভাবে
অনেকেই চিয়া সিড কোন কিছুর সাথে মিশিয়ে খেতে পছন্দ করে। কিন্তু কিভাবে রেসিপি
বানিয়ে খেতে হবে সে সম্পর্কে জানে না। আপনিও যদি রেসিপি বানাতে না
পারেন তাহলে এই পোস্টটির এই অংশটুকু ভালোভাবে পড়ুন। চলুন জেনে নেই কিভাবে
চিয়া সিড দিয়ে রেসিপি বানাতে হয়।
রেসিপি নাম্বার ওয়ান
এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ চিয়া সিড 30 মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর চিয়া
সিড ফুলতে শুরু করলে তাতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। এভাবে রেসিপি
বানিয়ে খেলে এর কার্যকারিতা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায়।
দুই নম্বর রেসিপি
এক কাপ দুধে তিন চা চামচ চিয়া সিড মিশিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন। তারপর সেটিকে চার
থেকে পাঁচ ঘন্টা ফ্রিজে রাখুন। তারপর এর উপরে ফল অথবা মধু দিয়ে আপনি খেতে পারেন।
এতে করে যেমন খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পাবে ঠিক তেমনি এর পুষ্টিগুণ বেড়ে
যাবে। তাই আপনি এভাবে রেসিপি বানিয়ে খেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ ইউরোপ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
তিন নম্বর রেসিপি
এক কাপ দুধ বা দইয়ের সাথে একটি কলা নিন, সাথে ১ চা চামচ চিয়া সিড নিন। স্বাদ
বৃদ্ধি করার জন্য সামান্য মধু যোগ করতে পারেন। সবগুলো উপকরণকে আপনি ব্লেন্ডার
মেশিন দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর সেগুলোকে ঠান্ডা করে খেতে পারেন। এ সকল
উপকরণ একসাথে মিশিয়ে রেসিপি বানিয়ে খেলে খেতে যেরকম সুস্বাদু হয় ঠিক তেমনি এর
উপকারিতা পাওয়া যায়।
চার নম্বর রেসিপি
এক কাপ দুধে আধা কাপ ওটস দিয়ে রান্না করে ঠান্ডা করুন। এবং তাতে ভেজানো চিয়া
সিড মিশ্রিত করুন। মিক্স করা হয়ে গেলে বাদাম ও ফল দিয়ে সেগুলো খেতে পারেন। এতে
আপনার খাবারের স্বাদ কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।
উপরের নির্দেশনা গুলি গুলো মেনে আপনি যদি রেসিপি বানান তাহলে আপনাকে সময় খুব কম
লাগবে, পাশাপাশি খেতেও সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর হবে। আপনি এই রেসিপিগুলো
দিনের যেকোনো সময় খেতে পারেন। তবে সকালে খালি পেটে খেলে সবচেয়ে বেশি ভালো ফল
পাওয়া যাবে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন, চিয়া সীড এর রেসিপি কিভাবে
বানাতে হয় এবং এটি কখন খেতে হয়।
লেখকের মন্তব্যঃ সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেয়েছেন। চিয়া সিড এর পুষ্টি ও গুনাগুন
মানবদেহের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এটি অধিক পরিমাণে গ্রহণ
না করে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এবং এটি কোথা থেকে কিনছেন সে বিষয়ে
খেয়াল রেখে এটি খাবেন।
আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে
ধন্যবাদ। এরকম আরো ইনফরমেটিভ তথ্য পেতে আমাদের protechtutor.com ওয়েবসাইটের সাথে
থাকুন। এবং চিয়া সিড খাওয়ার এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অন্যকে জানাতে এখনই এ
পোস্টটি শেয়ার করে আমাদের সাথেই থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।