ইউরোপ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা-২০২৫ বিস্তারিত-জানুন


সারাবিশ্বে দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়ছে, বিশেষ করে ইউরোপে এই চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ২০২৫ সালে ইউরোপীয়  দেশগুলো দক্ষ ও আধা দক্ষ শ্রমিক দের জন্য নতুন নিয়মে ইউরোপ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিচ্ছে।

ইউরোপ-ওয়ার্ক-পারমিট-ভিসা

সঠিক গাইডলাইন ও নির্দেশনা মানলে সহজেই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যায়। ২০২৫ সালে বেশ কয়েকটি দেশ ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পরিবর্তন এনেছে যা চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য জানা খুবই জরুরি।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ইউরোপ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়

ইউরোপ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়

 ইউরোপের প্রত্যেকটি দেশের ওয়ার্ক পারমিট নীতি ভিন্ন। তাই ইউরোপের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনি কোন দেশে যাবেন, কোন পেশাই জাবেন, এবং কি ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করেছেন তার উপর নির্ভর করে। প্রথমে আপনাকে নির্বাচন করতে হবে আপনি কোন দেশে যাবেন। তারপরে আপনাকে এই দেশের চাহিদা সম্পূর্ণ কোন পেশা নির্বাচন করতে হবে। এমন পেশা নির্বাচন করা উচিত নয় যে দেশে আপনি যেতে ইচ্ছুক সে পেশায় লোক নেওয়া হয় না। তাই পেশা নির্বাচনের সময়

আরো পড়ুনঃ মাত্র ১০ দিনে ইউরোপীয় সেনজেন ভিসা পাওয়ার উপায়

আপনাকে ভেবেচিন্তে পেশা নির্বাচন করতে হবে। এরপর আপনাকে নিয়োগকর্তার কাছ থেকে অফার লেটার গ্রহণ করতে হবে। এবং আপনি যে দেশে যাবেন সেই দেশের ওয়েবসাইটে গিয়ে ভিসা প্রসেসিং সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। অতঃপর আপনাকে ভিসা প্রসেসিং করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে অনলাইন বা দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন জমা দিতে হবে। আপনার কাগজপত্র ঠিক থাকলে সে দেশের ইমিগ্রেশন এর মাধ্যমে আপনাকে সে দেশে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করা হবে।

ইউরোপ ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ধরন সমূহ

ইউরোপের বহুমুখী  শিল্পখাত  গুলোতে ব্যাপক কর্মী নিয়োগ দেওয়ায় বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের এসব দেশে কর্মসংস্থানের জন্য অনেক মানুষ যাবার জন্য আবেদন করছেন। তবে চাকরির ধরন না জানাই অনেকের চাকরি হচ্ছে না। সাধারনত ইউরোপে বিভিন্ন ধরনের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা রয়েছে। তবে নিচের কয়েকটি ধরন বেশ প্রচলিত ঃ

 ইইউ ব্লু কার্ড ভিসাঃ ই ইউ ব্লু কার্ড ভিসা ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে প্রচলিত একটি কর্মী ভিসা। এটি উচ্চ শিক্ষিত ও দক্ষ পেশাজীবীদের জন্য ইউরোপে স্থায়ীভাবে কাজের সুযোগ দেই। ই ইউ ব্লু কার্ড ভিসার মাধ্যমে ইউরোপের সেনজেনভুক্ত যেকোনো দেশে যেতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনাকে উচ্চশিক্ষাগত যোগ্যতা ও কাজের দক্ষতা থাকতে হবে। তবেই শুধুমাত্র আপনি ই ইউ ব্লু কার্ড ভিসা পাবেন। 

জব সীকার ভিসাঃ ইউরোপে কাজের জন্য  জব সীকার ভিসা বহুল প্রচলিত একটি ভিসা। এটি ইউরোপে প্রবেশ করে কাজ খোঁজার সুযোগ করে দেয়। এই ভিসায় আপনি কোন কোম্পানির আওতাধীন অবস্থায় না থেকে ইউরোপে গিয়ে আপনি কাজের সন্ধান করতে পারবেন। এতে আপনাকে কোন কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে না। আপনি আপনার ইচ্ছেমতো যেকোন কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারবেন। 

স্কিল ওয়ার্ক ভিসাঃ  ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্যে কাজের জন্য এই ভিসা বহুল প্রচলিত। স্কিল ওয়ার্ক ভিসা অভিজ্ঞ পেশাজীবীদের কাজের সুযোগ দেই।এই ভিসার মাধ্যমে আপনি সেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে কাজের জন্য যেতে পারবেন। এই ভিসাটি পাবার জন্য আপনাকে চাকরির আবেদন করতে হবে। এই স্কিল ওয়ার্ক ভিসা পাবার জন্য অবশ্যই আপনার ইংরেজি ভাষা ও কাজের দক্ষতা থাকতে হবে। 

সিজনাল ওয়ার্ক ভিসাঃ  ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সিজনাল ওয়ার্ক ভিসাতে লোক নেই। কৃষি অথবা পর্যটন খাতে মৌসুমি কাজের জন্য এই ভিসা প্রদান করা হয়। এই ভিসাতে শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন না থাকলেও কাজের যথেষ্ট যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। এই ভিসা পাওয়ার জন্য আপনার কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র থাকতে হবে। ইউরোপের দেশ ইতালি ও নেদারল্যান্ডসে এই ভিসায় প্রতিবছর অনেক কর্মী নেওয়া হয়। 

ওয়ার্ক পারমিট পেতে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও কাগজপত্র 

 ইউরোপের অনেক দেশে কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক। কাজের দক্ষতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে ইউরোপে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যায়। এছাড়াও দুই থেকে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে চাকরি পাওয়া সহজ হয়। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য একজন আবেদন কারির  নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয় যেমনঃ 
  •  বৈধ পাসপোর্ট
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র .
  • নিয়োগকর্তার দেওয়া  অফার লেটার 
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স 
  • মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট 
  • পূর্বের কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ (যদি প্রয়োজন হয়) 
  • ভাষা দক্ষতার প্রমাণ (যদি প্রযোজ্য  হয়)

কোন কোন দেশে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া সহজ 

ইউরোপের প্রতিটি দেশের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নীতি ভিন্ন। কিছু দেশে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য জটিলতা রয়েছে। আবার  কিছু দেশে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নীতির প্রক্রিয়া শিথিল করা হয়েছে। যেসব দেশের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া সহজ সেই দেশগুলোকে নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলঃ

লিথুয়ানিয়াঃ  বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর কাজের জন্য অনেক শ্রমিক গিয়ে থাকে। বিশেষ করে শিল্প এবং নির্মাণ শ্রমিকরা এই দেশে বেশি গিয়ে থাকে।  কারন শিল্পখাত এবং  নির্মাণ কাজ শ্রমিকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া অন্য দেশের তুলনায়  এই দেশে সহজ।আপনি যদি শিল্প অথবা নির্মাণ কাজের জন্য ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান তাহলে লিথি নেয়া হবে আপনার জন্য প্রথম পছন্দ। 

পর্তুগালঃ  ইউরোপের আরেকটি দেশ পর্তুগালে  প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রচুর লোক নেওয়া হয়। পর্তুগালে রেস্টুরেন্ট, ক্লিনিং, কেয়ারগিভার ইত্যাদি এ জাতীয় কাজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই  এ সকল যাবতীয় কাজের জন্য  ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নীতি প্রক্রিয়ার জটিলতা কম।তাই আপনি যদি কাজের জন্য ইউরোপের দেশ যেতে চান তাহলে আপনার জন্য পর্তুগাল বেস্ট অফশান হবে।

পোল্যান্ডঃ   ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য ভিসা নীতি প্রক্রিয়া শিথিল  করেছেন।  পোল্যান্ডে সাধারণত শ্রমিক এবং ফ্যাক্টরির কাজের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া নীতি সহজ। তাই বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ফ্যাক্টরি কাজের জন্য অনেকেই পোল্যান্ড যেয়ে থাকে। আপনিও ও ফ্যাক্টরি কাজের জন্য পোল্যান্ড যেতে পারেন। 

রোমানিয়াঃ  কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য  রোমানিয়া হতে পারে আপনার জন্য প্রথম পছন্দ। কারণ এদেশে কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য প্রচুর লোক নেওয়া হয়। এবং অন্যান্য দেশের চাইতে  কাজের বেতন তুলনামূলক বেশি। রোমানিয়াতে সাধারণত  ড্রাইভার, কনস্ট্রাকশন, ওয়্যারহাউস ইত্যাদির জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া সহজ। 

  ভাষা দক্ষতা ও ট্রেনিং এর প্রয়োজনীয়তা

ইউরোপ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে হলে আপনাকে ভাষা শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যেমন দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া,ফ্রান্স, জার্মানি ইত্যাদি দেশে যেতে হলে অবশ্যই আপনাকে সেই দেশের ভাষা শিখতে হবে। এছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে হলে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়াও আপনি যে কাজের জন্য যাবেন সে কাজের উপর ট্রেনিং দিতে হবে।এসব কাজের ট্রেনিংয়ের জন্য আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোর্স করতে পারেন। ইউরোপের বিভিন্ন
ইউরোপ-ওয়ার্ক-পারমিট-ভিসা


দেশে যাবার জন্য বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলোতে আপনি করতে পারেন। যেমন বিএমইটি ও বিটিইবি বিদেশে চাকরি ও কাজ করার জন্য ট্রেনিং দিয়ে থাকে। এছাড়াও ভাষা শিক্ষার জন্য আপনি বিভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টার বা আইইএলটিএস কোর্স করতে পারেন। আপনার ভাষা শেখার কোর্স করা থাকলে এবং কাজের দক্ষতা থাকলে  আপনার চাকরির নিশ্চয়তা অনেকটা বেড়ে যাই।তাই আপনি যদি ইউরোপ যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ভাষা শিখতে হবে এবং আপনার কাজের দক্ষতা থাকতে হবে। 

 আবেদন  করার ধাপ এবং প্রক্রিয়া সমূহ

ইউরোপ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে অফার  লেটার পাওয়া।বিভিন্ন জব পোর্টাল ও নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আপনি অফার লেটার সংগ্রহ করতে পারেন। আপনি যখন অফার লেটার পেয়ে যাবেন তখন কোম্পানি আপনার জন্য অনুমোদন চেয়ে  সংশ্লিষ্ট দেশের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবে।

 ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ আপনার অফার লেটারটি দেখে যদি আপনার অফার লেটারটি ঠিক থাকে তাহলে আপনাকে  সে দেশে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করবে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং করার জন্য আপনার অফার লেটার,ভোটার আইডি কার্ডের ছবি, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, পাসপোর্ট অফিসার আবেদন ফর্ম,শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ইত্যাদি দেখা হয়।


এছাড়াও আপনার কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র ভাষা দক্ষতার প্রমাণপত্র বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। এছাড়াও মেডিকেল রিপোর্ট ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর কাগজপত্র দেখা হয়। এই সমস্ত কাগজগুলো ঠিক থাকলে  এবং আপনার আবেদন অনুমোদিত হলে আপনাকে কাজের জন্য অনুমোদন দেওয়া হবে এবং আপনি যেই দেশ যাবেন সেই দেশের দূতাবাস থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন। 

কোন কোন সেক্টরে কাজের সুযোগ সুবিধা বেশি? 

ইউরোপের দেশগুলো উন্নত হওয়ায় এবং বহুমুখী শিল্পখাতের জন্য সবার কর্মসংস্থানের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য হচ্ছে ইউরোপ । বর্তমানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে। তাই আপনি যদি ইউরোপে যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ইউরোপের কোন দেশে কি ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে তা আপনাকে জানতে হবে। 

বর্তমানে ইউরোপে কোন ধরনের কাজের চাহিদা বেশি তা নিচে বলা হলো। বর্তমানে ইউরোপে ফুড ডেলিভারি সার্ভিস, উবার ড্রাইভার, ট্যাক্সি ড্রাইভার, কৃষি শ্রমিক, সিকিউরিটি গার্ড, রেস্টুরেন্ট ক্লিনার, হোটেল কর্মী, কনস্ট্রাকশন শ্রমিক, এবং শপিংমল কর্মী ইত্যাদি কাজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আপনি যদি এ সকল কাজে ইউরোপে যেতে চান তাহলে এসব কাজের জন্য দুই থেকে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে । তহলে আপনি সহজেই  কাজ পেয়ে যাবেন ।

ইউরোপের কোন দেশে বেতন সবচেয়ে বেশি

আজকের আর্টিকেলের এই অংশে ইউরোপের কোন দেশের বেতন কিরকম সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি ইউরোপের কোন দেশে কি রকম বেতন দেওয়া হয় সে সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলের এই অংশটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ইউরোপের দেশগুলোর বেতন সম্পর্কে।

সিঙ্গাপুরঃ সিঙ্গাপুরে অন্যান্য ইউরোপ কান্ট্রির চেয়ে বেতন তুলনামূলক বেশি হওয়ায় এই দেশে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের মানুষের আগ্রহ সব সময় বেশি থাকে। সিঙ্গাপুরে একজন প্রবাসীর বার্ষিক আয় এক লাখ ৩৮ হাজার ৬৪১ মার্কিন ডলার। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে সিঙ্গাপুর দেশটি প্রবাসীদের জীবন যাপনের জন্য ইতিবাচক হতে পারেনি।

 ২০২৪ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ৬২ ভাগ প্রবাসী সিঙ্গাপুর গিয়ে তাদের ক্যারিয়ার উন্নত করতে পেরেছে। এর বিপরীতে ৩০ ভাগ প্রবাসী এমন আছেন যে তারা সে দেশে গিয়ে উন্নত জীবনযাপনে পৌঁছাতে পারেনি। আপনি যদি এই দেশটিতে প্রবাসী শ্রমিক হিসাবে যেতে চান তাহলে ও অবশ্যই আপনাকে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কেননা এই দেশটিতে প্রবাসীদের সফলতার হার মাত্র ৬২%।
ইউরোপ-ওয়ার্ক-পারমিট-ভিসা


নরওয়েঃ এই দেশটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেশ বলা হয়। এই দেশটিতে একজন প্রবাসীর বার্ষিক আয় ৯৭ হাজার ৪৮৬ মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ৮৭ ভাগ প্রবাসী বলছে তারা এই দেশটিতে গিয়ে তাদের ক্যারিয়ার উন্নত করতে পেরেছেন। এটি প্রবাসীদের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। আপনি যদি এই দেশটিতে যান তাহলে আপনিও আপনার ক্যারিয়ার উন্নত করতে পারবেন।

সুইডেনঃ বাংলাদেশের অনেক প্রবাসী ভাই সুইডেনে কাজ করে থাকেন। সুইডেনের আবহাওয়া ও পরিবেশ ভালো হওয়ায় অনেকেই কাজের জন্য এই দেশে পাড়ি জমান। সুইডেনে একজন প্রবাসীর বার্ষিক গড় আয় ৮৪ হাজার ৮০২ মার্কিন ডলার। এক সমিক্ষায় দেখা গেছে যে ৭১% লোক বলছে যে তারা সুইডেনে এসে তাদের ক্যারিয়ার উন্নত করতে পেরেছে এবং সুইডেনের কাজের পরিবেশ অনেক ভালো। তাই আপনি যদি ইউরোপে কাজের জন্য আসতে চান তাহলে এই দেশটিতে আসতে পারেন।

জার্মানিঃ ইউরোপের দেশ জার্মানি বাংলাদেশের প্রবাসীদের আগ্রহের একটি নাম। বাংলাদেশের অনেক প্রবাসী ভাই এই দেশটিতে কাজ করেন। জার্মানিতে একজন প্রবাসীর বার্ষিক গড় আয় ৯৭ হাজার ৬৯৩ মার্কিন ডলার। এক জরিপে দেখা গেছে প্রায় ৭৫% প্রবাসী এই দেশটিতে গিয়ে উন্নত জীবন যাপন করতে পেরেছেন। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের প্রবাসীদের জন্য এটি সেরা গন্তব্যস্থলে হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।

প্রতারণা বা দালাল এড়ানোর প্রয়োজনীয় পরামর্শ

অনেকেই দেখা যায় যে বিদেশে যেতে গিয়ে সে প্রতারণার বা দালাল চক্রের শিকার হয়ে থাকেন। যা একজন প্রবাসীর ক্যারিয়ার নষ্ট করে দেয়। প্রতারণা বা দালাল চক্রের হাতে না পড়ার জন্য আপনি ভিসা এবং পাসপোর্ট প্রক্রিয়া নিজে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চেক করতে পারেন। এছাড়া বৈধভাবে ইউরোপ যাওয়ার জন্য  আপনার সকল কাগজপত্র কোন লাইসেন্স প্রাপ্ত এজেন্সির মাধ্যমে অথবা সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করবেন।

 অন্য কোন এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করবেন না। না হলে আপনি বিপদে পড়তে পার। আবার দেখা যায় অনেক এজেন্সি নকল ওয়ার্ক পারমিট বা চাকরির অভাব দিয়ে প্রতারণা করে থাকেন এর জন্য আপনাকে সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে চেক করতে হবে যে আপনার ওয়ার্ক পারমিটটি আসল নাকি নকল। কারণ অনেক অসৎ এজেন্সি এখনো সক্রিয় রয়েছে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এই জন্য আপনি ভিসা নিশ্চিত হওয়ার পূর্বে বড় অংকের টাকা দিবেন না। 

উপসংহার ও লেখক এর মন্তব্য

আজকের এই আর্টিকেলে ইউরোপ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায় এবং কোন দেশের কাজের ভিসা কি রকম ও কোন দেশের বেতন কত সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় পাঠক ভাই ও বোন আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন ইউরোপ যেতে হলে আপনাকে কি করতে হবে। এবং যেকোনো দেশে যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে সেই দেশের ভিসা চালু আছে কিনা সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।

আপনি যদি ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান তাহলে আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে নরওয়ে যাওয়ার জন্য সাজেস্ট করব। এতক্ষণ আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে এই আর্টিকেলটি করার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। এরকম তথ্যবহুল বা আপনার  উপকারে আসে এমন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করে পাশেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন